لُّمَزَةٍ
هُمَزَةٍ لِّكُلِّ وَيْلٌ
“পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর জন্য দুর্ভোগ।” [সূরা হুমাযাহ:০১
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قِيْلَ يَا رَسُوْلَ
اللهِ مَا الْغِيْبَةُ قَالَ ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ قَالَ أَرَأَيْتَ
إِنْ كَانَ فِيهِ مَا أَقُولُ قَالَ إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدْ
اغْتَبْتَهُ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدْ بَهَتَّهُ
হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! গীবত কি? তিনি বলেনঃ তোমার ভাই সম্পর্কে (তার অনুপস্থিতে) এমন কিছু বলা, যা শুনলে সে ব্যথিত হয়। তখন বলা হয়ঃ আমি যে কথা বলি, তা যদি তার মধ্যে থাকে? (তবে কি গীবত হবে?) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি যা বলছো, তা যদি তার মধ্যে থাকে, তবে তুমি তার গীবত করলে; আর সে দোষ যদি তার মধ্যে না থাকে, তবে তো তুমি তার উপর বুহতান বা মিথ্যা দোষারোপ করলে, (যা গীবত থেকে অধিক দোষণীয়)। (সহীহ মুসলিম, অধ্যায় ৩১, হাদীস নং ৬২৬৫)
عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ
হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, চোগলখোর (পরোক্ষ নিন্দাকারী) জান্নাতে প্রবেশ করবে না’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, বাংলা মিশকাত হা/৪৬১২)।
গীবতের পরিনামঃ
الْيَوْمَ
تُجْزَى كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ لا ظُلْمَ الْيَوْمَ...وَاللَّهُ يَقْضِي
بِالْحَقِّ
‘‘আজ প্রত্যেক প্রাণ যা কিছু অর্জন করেছে তার প্রতিফল পাবে; কোনো যুলম নেই আজ।.... আল্লাহ হক্ক বিচার করেন।’(মুমিনুন-১
وَلَا
يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ
مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللهَ إِنَّ اللهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ.
“তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে, তোমাদের কেউ কি চায় যে, সে তার মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করবে? তোমরা তো এটাকে ঘৃণাই করে থাকো।” [সূরা হুজুরাত:১২]
عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ : قَالَ
رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا عُرِجَ بِيْ رَبِّيْ مَرَرْتُ
بِقَومٍ لَهُمْ أظْفَارٌ مِنْ نُحَاسٍ يَخْمِشُوْنَ وُجُوْهَهُمْ وَصُدُوْرَهُمْ
فَقُلْتُ مَنْ هؤُلاَءِ يَا جِبْرِيْلُ؟ قَالَ هؤُلاَءِ الَّذِيْنَ يَأكُلُوْنَ
لُحُوْمَ النَّاسِ وَيَقَعُوْنَ فِيْ أعْرَاضِهِمْ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মিরাজের সময় আমাকে এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো যাদের নখ ছিল তামার। তারা তাদের মুখমণ্ডল ও দেহ আঁচড়াচ্ছিল। আমি জিবরীল আঃ-কে জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তিনি বললেন, এরা নিজ ভাইদের গীবত করত ও ইজ্জতহানি করত। (মুসনাদে আহমাদ ৩/২২৪, সুনানে আবু দাঊদঃ ৪৮৭৮)
عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ صَعِدَ
رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمِنْبَرَ فَنَادَى بِصَوْتٍ
رَفِيعٍ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ مَنْ أَسْلَمَ بِلِسَانِهِ وَلَمْ يُفْضِ
الْإِيْمَانُ إِلَى قَلْبِهِ، لاَ تُؤْذُوْا الْمُسْلِمِيْنَ وَلاَ
تُعَيِّرُوْهُمْ وَلاَ تَتَّبِعُوْا عَوْرَاتِهِمْ، فَإِنَّهَ مَنْ تَتَبَّعَ
عَوْرَةَ أَخِيْهِ اَلْمُسْلِمِ تَتَبَّعَ اللهُ عَوْرَتَهُ، وَمَنْ تَتَبَّعَ
اللهُ عَوْرَتَهُ يَفْضَحْهُ وَلَوْ فِىْ جَوْفِ رَحْلِهِ
রাসূল(সা) একবার লোকদের ডেকে বলেন, ” হে মানুষেরা, যারা মুখে মুখে ঈমান এনেছ এবং ঈমান যাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি, অপর মুসলিমের গীবত করোনা, অন্যের দোষ-ত্রুটি অন্বেষন করোনা, কারন যে অন্যের দোষ-ত্রুটি অন্বেষন করে বেড়ায়, আল্লাহ তার দোষ অন্বেষণ করেন, আর আল্লাহ যার দোষ অন্বেষনে লেগে যান তিনি তাকে তার ঘরের মধ্যেই অপমান করে ছাড়েন।” (সুনানে আবু দাঊদঃ ৪৮৬২, তিরমিজীঃ ১৬৫৫)
تَدْرُونَ مَا (مَنِ)
الْمُفْلِسُ قَالُوا الْمُفْلِسُ فِينَا مَنْ لا دِرْهَمَ لَهُ وَلا مَتَاعَ
فَقَالَ إِنَّ الْمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِي يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِصَلاةٍ وَصِيَامٍ
وَزَكَاةٍ وَيَأْتِي قَدْ شَتَمَ هَذَا وَقَذَفَ هَذَا وَأَكَلَ مَالَ هَذَا
وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ وَهَذَا
مِنْ حَسَنَاتِهِ فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يُقْضَى مَا عَلَيْهِ
أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرِحَ فِي النَّارِ
‘‘তোমরা কি জান কপর্দকহীন দরিদ্র কে? সাহাবীগণ বলেন: আমাদের মধ্যে দরিদ্র তো সেই যার কোনো অর্থ-সম্পদ নেই। তিনি বলেন: আমার উম্মাতের অসহায় দরিদ্র সে ব্যক্তি যে কিয়ামাতের দিন সালাত, সিয়াম, যাকাত ইত্যাদি নিয়ে আগমন করবে। কিন্তু সে কাউকে গালি দিয়েছিল, কাউকে অপবাদ দিয়েছিল, কারো সম্পদ ভক্ষণ করেছিল, কারো রক্তপাত করেছিল, কাউকে প্রহার করেছিল। তখন একে একে এ সকল মাযলূমকে তার পুণ্য থেকে প্রদান করা হবে। তার যিম্মায় বিদ্যমান অপরাধ শেষ হওয়ার আগেই যদি তার পুণ্য শেষ হয়ে যায় তবে মাযলূমদের পাপ নিয়ে তার উপর নিক্ষেপ করা হবে, অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’(মুসলিম)
গীবত কবীরা গুনাহ্র অন্তর্ভুক্ত। গীবতের পাপ সুদ অপেক্ষা বড়; বরং হাদিসে গীবতকে বড় সুদ বলা হয়েছে (সহীহ আত্ তারগীব)
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قُلْتُ
لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَسْبُكَ مِنْ صَفِيَّةَ كَذَا
وَكَذَا تَعْنِي قَصِيْرَةً فَقَالَ لَقَدْ قُلْتِ كَلِمَةً لَوْ مُزِجَتْ بِهَا
الْبَحْرَ لَمَزِجَتْهُ
মুসাদ্দাদ (রহঃ) .... আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলি আপনার জন্য তো যথেষ্ট যে, সুফিয়ার মধ্যে তো এই-এই দোষ আছে। রাবী মুসাদ্দাদ (রহঃ)-এর বর্ণনায় আছেঃ তিনি খর্বাকায় ছিলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ (হে আইশা), তুমি এমন কথা বললে, যদি তা সমুদ্রের অথৈ পানিতে নিক্ষেপ করা হয়, তবে তাতে সমুদ্রের পানির রং বদলে যাবে! তখন আইশা (রাঃ) বলেনঃ আমি একজন থেকে শুনে এরূপ বলেছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কোন ব্যক্তির কথা বর্ণনা করা আমার কাছে আদৌ পসন্দনীয় নয়, যদিও এর বিনিময়ে এত-এত অর্থ দেয়া হয়। (অর্থাৎ গীবত বা পরনিন্দা করা মোটেও উচিত নয়।)”(আবু দাঊদঃ ৪৮৭৫, তিরমিজীঃ ২৬২৪, আহমাদ ৬/১৮৯্লি
আব্দুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রা:) বলেনঃ “(একদা) আমরা নাবী কারীম (সা:)-এর নিকটে ছিলাম। এমতাবস্থায় একজন ব্যক্তি উঠে চলে গেল। তার প্রস্থানের পর একজন তার সমালোচনা করল। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সা:) তাকে বললেনঃ তোমার দাঁত খিলাল কর। লোকটি বললঃ কি কারণে দাঁত খিলাল করব? আমিতো কোন গোশত ভক্ষণ করিনি। তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই তুমি তোমার ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করেছ অর্থাৎ ‘গীবত’ করেছ।” ত্বাবারানী, ইবন আবী শায়বা, হাদিস সহীহ্ দ্রষ্টব্য গায়াতুল মারাম #৪২৮
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যত্র বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার জন্য তার জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের জিম্মাদার হবে, আমি তার জন্য জান্নাতের জিম্মাদার হবো।’ (বুখারি:১১/৩০৮ )
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ سُئِلَ رَسُوْلُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ أَكْثَرِ مَا يُدْخِلُ النَّاسَ الْجَنَّةَ
فَقَالَ تَقْوَى اللهِ وَحُسْنُ الْخُلُقِ وَسُئِلَ عَنْ أَكْثَرِ مَا يُدْخِلُ
النَّاسَ النَّارَ فَقَالَ الْفَمُ وَالْفَرْجُ-
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা কি জান! কোন জিনিস মানুষকে সবচেয়ে বেশী জান্নাতে প্রবেশ করাবে? তা হচ্ছে- আল্লাহভীতি ও উত্তম চরিত্র। তোমরা কি জান মানুষকে কোন জিনিস সবচেয়ে বেশী জাহান্নামে প্রবেশ করাবে? তা হচ্ছে- দু’টি মধ্যস্থান। একটি মুখ বা জিহবা, অপরটি লজ্জাস্থান’ (তিরমিযী, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৬২১, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় যে, মানুষকে জাহান্নামে প্রবেশ করানোর সবচেয়ে বড় মাধ্যম হচ্ছে জিহবা। কারণ জিহবা দ্বারা মানুষ সত্যকে মিথ্যা ও মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করতে পারে। এর কারণে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সমাজে বিশৃংখলা, অশান্তি, অরাজকতা ও নৈরাজ্য নেমে আসে। এজন্য জিহবা নিয়ন্ত্রণ করা যরূরী।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ
مِنْ رِضْوَانِ اللهِ لَا يُلْقِي لَهَا بَالاً يَرْفَعُهُ اللهُ بِهَا دَرَجَاتٍ
وَإِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ سَخَطِ اللهِ لَا يُلْقِي
لَهَا بَالًا يَهْوِي بِهَا فِي جَهَنَّمَ، وَفِيْ رِوَايَةٍ لَهُمَا يَهْوِي
بِهَا فِي النَّارِ أَبْعَدَ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ-
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই বান্দা কখনও এমন কথা বলে যাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি বিদ্যমান। অথচ সে তার গুরুত্ব জানে না। আল্লাহ এর দ্বারা মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। পক্ষান্তরে বান্দা এমন কথা বলে, যাতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি বিদ্যমান। অথচ সে তার অনিষ্ট সম্পর্কে অবগত নয়। আর এ কথাই তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে। বুখারী ও মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, এই কথাই তাকে জাহান্নামের এত গভীরে পৌঁছে দেয়, যার পরিধি পূর্ব ও পশ্চিমের দূরত্ব পরিমাণ’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৮১৩; বাংলা ৯ম খন্ড, হা/৪৬০২ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়)। উল্লিখিত হাদীছ সমূহ দ্বারা বুঝা যায় যে, মানুষের যবান সাংঘাতিক জিনিস, যা মানুষকে জান্নাতের উচ্চ শিখরে পৌঁছে দেয় এবং জাহান্নামের গভীর গহবরেও ডুবিয়ে দেয়।
عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ كَانَ ذَا وَجْهَيْنِ
فِي الدُّنْيَا كَانَ لَهُ لِسَانَانِ مِنْ نَارٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ-
আম্মার ইবনু ইয়াসার (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াতে দ্বিমুখী, ক্বিয়ামতের দিন তার (মুখে) আগুনের জিহবা হবে’ (দারেমী, বাংলা মিশকাত হা/৪৬৩৩)।
عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالطَّعَّانِ
وَلَا بِاللَّعَّانِ وَلَا الْفَاحِشِ وَلَا الْبَذِيْءِ-
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘মুমিন ব্যক্তি ভৎর্সনাকারী, অভিসম্পাৎকারী, অশ্লীল গালমন্দকারী ও নির্লজ্জ হতে পারে না’ (তিরমিযী, বায়হাক্বী, বাংলা
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ
قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إيَّاكُمْ وَالظَّنَّ، فَإنَّ
الظَّنَّ أَكْذَبُ الحَدِيْثِ، وَلاَ تَحَسَّسُوْا، وَلاَ تَجَسَّسُوْا، وَلاَ
تَنَاجَشُوْا، وَلاَ تَحَاسَدُوْا، وَلاَ تَبَاغَضُوْا، وَلاَ تَدَابَرُوْا
وَكُوْنُوْا عِبَادَ الله إِخْوَانًا.
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, কারো সম্পর্কে (মন্দ) ধারণা হতে বেঁচে থাক। কেননা আনুমানিক ধারণা বড় ধরনের মিথ্যা। কারো কোন দোষের কথা জানতে চেষ্টা কর না। গোয়েন্দাগিরি কর না। ক্রয়-বিক্রয়ে ধোঁকাবাজি কর না। পরস্পর হিংসা রেখ না। পরস্পর শত্রুতা কর না এবং একে অন্যের পিছনে লেগ না। বরং পরস্পর এক আল্লাহর বান্দা ও ভাই ভাই হয়ে থাক। অপর এক বর্ণনায় আছে, ‘পরস্পর লোভ-লালসা কর না’। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, বাংলা মিশকাত হা/৪৮০৮)
« لاَ يَرْمِي رَجُلٌ رَجُلاً بِالفِسْقِ أَوِ الكُفْرِ ، إِلاَّ ارْتَدَّتْ
عَلَيْهِ ، إنْ لَمْ يَكُنْ صَاحِبُهُ كذَلِكَ » . (رواه البخاري).
“কোনো
ব্যক্তি যেন
অপর
কোনো
ব্যক্তিকে ফাসেক
অথবা
কাফির
না বলে; কারণ, সে ব্যক্তি যদি প্রকৃতই তা না হয়ে থাকে, তাহলে এ অপবাদ
তার
নিজের
ঘাড়ে
এসে
পড়বে।”[11]
তিনি
আরও
বলেন:
« المُتَسَابَّانِ مَا قَالاَ فَعَلَى البَادِي منهُما حَتَّى يَعْتَدِي
المَظْلُومُ » . (رواه مسلم).
“পরস্পরকে গালি
প্রদানকারী দুই
ব্যক্তির মধ্যে
যে আগে গালি দিয়েছে, সে দোষী
বলে
গণ্য
হবে,
যতক্ষণ না নির্যাতিত ব্যক্তি (অর্থাৎ প্রথম যাকে গালি দেয়া হয়েছে) সীমা অতিক্রম করবে।”[12] নবী সাল্লাল্লাহু
لا تَسُبُّوا الأَمْوَاتَ ، فَإنَّهُمْ قَدْ
أفْضَوْا إِلَى مَا قَدَّمُوا » . (رواه البخاري).
“তোমরা
মৃতদেরকে গালি
দিয়ো
না;
কারণ,
তারা
যা কিছু করেছে, তার ফলাফলের কাছে পৌঁছে গেছে।”[13] তিনি আরও বলেন:
“তোমরা পরস্পরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করো না, নকল ক্রেতা সেজে আসল ক্রেতার সামনে পণ্যদ্রব্যের দাম বাড়িয়ে বলবে না, পরস্পরের প্রতি ঘৃণা পোষণ করো না এবং পরস্পর পরস্পরের পিছনে লেগনা; আর তোমরা আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে যাও।”[17] তিনি আরও বলেন:
«
إيَّاكُمْ وَالظَّنَّ ، فَإنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الحَدِيثِ » . (مُتَّفَقٌ
عَلَيهِ).
“সাবধান! তোমরা
অযথা
ধারণা
করা
থেকে
বিরত
থাক;
কেননা,
অযথা
ধারণা
পোষণ
করা
সবচেয়ে বড় ধরনের মিথ্যা।”
বেচে থাকার উপায়ঃ
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ
قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ مَا النَّجَاةُ قَالَ أَمْسِكْ عَلَيْكَ لِسَانَكَ
وَلْيَسَعْكَ بَيْتُكَ وَابْكِ عَلَى خَطِيئَتِكَ-
উকবা ইবনু আমির (রাঃ) বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং বললাম, নাজাতের উপায় কি? তিনি বললেন, নিজের জিহবা আয়ত্তে রাখ, নিজের ঘরে পড়ে থাক এবং নিজের পাপের জন্য রোদন কর’ (আহমাদ, তিরমিযী, বাংলা মিশকাত হা/৪৬২৬)।
الْجَاهِلِينَ نَبْتَغِي لَا عَلَيْكُمْ سَلَامٌ أَعْمَالُكُمْ وَلَكُمْ أَعْمَالُنَا لَنَا وَقَالُوا عَنْهُ أَعْرَضُوا اللَّغْوَ سَمِعُوا وَإِذَا
তারা যখন অবাঞ্চিত বাজে কথাবার্তা শ্রবণ করে, তখন তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, আমাদের জন্যে আমাদের কাজ এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের কাজ। তোমাদের প্রতি সালাম। আমরা অজ্ঞদের সাথে জড়িত হতে চাই না। (কাসাস-৫৫)
بِنَمِيمٍ ءمَّشَّا هَمَّازٍ -مَّهِينٍ
حَلَّافٍ كُلَّ تُطِعْ وَلَا
যে অধিক শপথ করে, যে লাঞ্ছিত, আপনি তার আনুগত্য করবেন না। যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে ফিরে। (কলম-১০,১১)
যে ব্যাক্তির সম্পর্কে গীবত করা হয়েছে তাকে যদি খুজে না পাওা যায় তাহলে , আল্লাহর রাসুল সঃ বলেছেন “নিশ্চই গীবতের একটি ক্ষতিপূরণ হচ্ছে নিজের জন্য এবং তার জন্য এই ভাবে দোয়া করা যে “ আল্লাহ আমাকে এবং তাকে ক্ষমা করো”। (বান্দার হক ও সৃষ্টির সেবা,৮৫)
:قَالَ ، وسلم عليه الله صلى الله رَسُولَ أنَّ : عَنهُمَا الله رَضِيَ عُمَرَ ابنِ وَعَنِ الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ لَا يَظْلِمُهُ وَلَا يُسْلِمُهُ وَمَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ أَخِيهِ كَانَ اللَّهُ فِي حَاجَتِهِ وَمَنْ فَرَّجَ عَنْ مُسْلِمٍ كُرْبَةً فَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرُبَاتِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
মুসলিম মুসলিমের ভাই। সে তার ওপর জুলুম করবে না এবং তাকে জালিমের হাতে সোপর্দ করবে না। যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে আল্লাহ তার অভাব পূরণ করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের বিপদ দূর করবে, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তার বিপদ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন করবে, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তার দোষ গোপন করবেন। (সহীহ বুখারী: ২৪৪২, ৬৯৫১)